কক্সবাজার এর দর্শনীয় স্থানসমূহ: সমুদ্র, পাহাড় আর
অফুরন্ত রোমাঞ্চের লীলাভূমি
বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারের
দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ কিলোমিটার। সাদা বালুকাবেলা, নীল জলরাশি,
সূর্যাস্তের লালিমা আর পাহাড়-ঝর্ণার অপূর্ব সমন্বয়ে কক্সবাজার যেন
প্রকৃতির এক জীবন্ত ক্যানভাস। প্রতি বছর লাখো পর্যটক শুধু সমুদ্রের ঢেউ
নয়, বরং অসংখ্য আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে এখানে ছুটে আসেন।
কক্সবাজার শুধুই সৈকত নয়; এটি সংস্কৃতি, জীবনধারা ও স্থানীয় ঐতিহ্যের
রঙে রঙিন এক শহর। বার্মিজ মার্কেট, স্থানীয় জেলেদের জীবন, পাহাড়ি
জনপদের খাবার এবং নানান উপজাতির সংস্কৃতি ভ্রমণকে আরও বর্ণিল করে তোলে।
সমুদ্রতীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে ভ্রমণকারীরা খুঁজে পান এখানকার মানুষের
আন্তরিকতা ও আতিথেয়তার স্পর্শ, যা কক্সবাজারকে করে তোলে আরও স্মরণীয়।
সমুদ্রের গর্জন, পাহাড়ের সবুজ ঢাল, ঝর্ণার স্রোত, নীরব দ্বীপ আর নীল
আকাশের বিস্তারে কক্সবাজার হয়ে উঠেছে এক স্বপ্নের গন্তব্য। এই ব্লগে
আমরা বিস্তারিত জানব কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানসমূহ,
কখন ভ্রমণ উপভোগ্য, কী খাবেন এবং কীভাবে পুরো সফরটিকে আরও রোমাঞ্চকর
করে তুলবেন।
কক্সবাজার ভ্রমণের সেরা সময়
হলো নভেম্বর থেকে মার্চ। এ সময় আবহাওয়া ঠান্ডা ও শান্ত থাকে,
সমুদ্র থাকে পরিষ্কার আর নীলাভ। বর্ষাকালে (জুন–আগস্ট) ঢেউ বড় হয় এবং
অনেক সময় জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে, তাই সেন্ট মার্টিন বা দূরবর্তী দ্বীপ
ভ্রমণের জন্য শীতকাল সবচেয়ে উপযুক্ত।
কক্সবাজারের প্রধান ১৫টি দর্শনীয় স্থানসমূহ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের রত্ন কক্সবাজার — এটি শুধু বিশ্বের
দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকতের শহর নয়, বরং প্রকৃতির এক অপূর্ব আশীর্বাদ।
চলুন জেনে নিই কক্সবাজার এর সেরা ১৫টি দর্শনীয় স্থান এবং কীভাবে আপনি
এই সফরকে অবিস্মরণীয় করে তুলবেন।
০১
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত – বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত
কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত, প্রায় ১২০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই সমুদ্রতীর কক্সবাজারের হৃদয়।
লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, ইনানী ও টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত এই সৈকত
প্রতিদিন সূর্যাস্তের লাল আভায় নতুন রূপ নেয়।
লইট্টা ফ্রাই: কক্সবাজারের একটি জনপ্রিয় সামুদ্রিক মাছের পদ,
যা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়।
শুটকি: ছুরি শুটকি ভর্তা ও অন্যান্য শুটকি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন
পদ খেতে পারেন।
ভর্তা: বিভিন্ন ধরনের মাছ (যেমন: কোরাল) ও সবজি ভর্তা পাওয়া
যায়।
সামুদ্রিক মাছ: বিভিন্ন প্রকারের সামুদ্রিক মাছ, যেমন কোরাল,
পাংগাস ইত্যাদি দিয়ে রান্না করা খাবার খেতে পারেন।
ঐতিহ্যবাহী ও উপজাতি খাবার
বলা পিঠা: এটি একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার।
মুন্ডি: এটি একটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের খাবার।
চিকেন লাকসু: পাহাড়ি অঞ্চলের আদিবাসীদের একটি জনপ্রিয়
খাবার।
০২
লাবণী পয়েন্ট ও মেরিন ড্রাইভ – প্রাণবন্ত সৈকত জীবন
লাবণী পয়েন্ট
হলো শহরের প্রাণ। সূর্যাস্তের সময় এখানে হাজার মানুষের জমায়েত হয়।
রাতের বেলায় এখানে দোকান, খাবার ও আলোয় ভরে ওঠে পরিবেশ।
মেরিন ড্রাইভ রোড
ধরে গাড়ি চালিয়ে বা হেঁটে সমুদ্রের পাশে সময় কাটানো এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
০৩
কলাতলী ও পাটুয়ারটেক বিচ – শহরের প্রাণকেন্দ্র
কক্সবাজার শহরের মূল অংশে অবস্থিত এই দুই সৈকত অংশে সারাদিন ভিড় লেগে
থাকে।
কলাতলী
বিচ-এ আপনি পানির উপরে স্কুটার রাইড, ঘোড়ায় চড়া এবং বিচ বাইক চালানোর
অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। এছাড়া, কাছেই রয়েছে অসংখ্য হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও
মার্কেট।
২০২৪ সালে উদ্বোধন হওয়া এই অ্যাকোয়ারিয়ামে রয়েছে ১০০০+ প্রজাতির
মাছ, শার্ক টানেল, জেলিফিশ জোন। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ড্রাই
অ্যাকোয়ারিয়াম।
সময়: সকাল ৯টা–সন্ধ্যা ৭টা
টিকেট: বড়দের ৩০০৳, শিশুদের জন্য ফ্রি
বিশেষ আকর্ষণ: শার্ক টানেল ও জেলিফিশ জোন
০৫
রামু – বৌদ্ধ মন্দির ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য
কক্সবাজার থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামু উপজেলা, যেখানে
আছে অসংখ্য বৌদ্ধ মন্দির ও প্যাগোডা। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো
রামু বুদ্ধমূর্তি, যা দক্ষিণ এশিয়ার
অন্যতম বৃহৎ শায়িত বুদ্ধমূর্তি।
কি করবেন:
বৌদ্ধ মন্দির ভ্রমণ
পাহাড়ের দৃশ্য দেখা
স্থানীয় হস্তশিল্প কেনা
০৬
ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক – বন্যপ্রাণীর জগতে প্রবেশ
প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী প্রেমীদের জন্য ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক একটি
চমৎকার গন্তব্য। কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে এই
পার্কটি অবস্থিত। এখানে আপনি হাতি, বানর, হরিণ, ময়ূর সহ নানা ধরনের
বন্যপ্রাণী অবাধে বিচরণ করতে দেখতে পারবেন।
শহর থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান, যেখানে পাহাড়, বন আর
ঝর্ণার মিশেল। বর্ষায় এর সৌন্দর্য সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর হয়। হিমছড়ির পাহাড়
থেকে সূর্যাস্ত দেখা এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
কি করবেন:
পাহাড়ে ট্রেকিং করে সমুদ্রের দৃশ্য দেখা
ঝর্ণার নিচে স্নান
পিকনিক বা ফটোগ্রাফি
কি খাবেন:
হিমছড়ি বাজারে ভাজা মাছ ও স্থানীয় চা
মৌসুমি ফল ও ডাবের পানি
০৮
দরিয়ানগর – পাহাড় ও গুহার রহস্য
হিমছড়ির দক্ষিণে অবস্থিত দরিয়ানগর হলো কক্সবাজারের একটি
তুলনামূলক কম পরিচিত কিন্তু অত্যন্ত সুন্দর স্থান। এখানে পাহাড়ের নিচে
রয়েছে একটি প্রাকৃতিক গুহা, যার ভেতরে জলধারা প্রবাহিত হয়। এটি ট্রেকিং
ও ফটোগ্রাফির জন্য আদর্শ জায়গা।
কি করবেন:
গুহা এক্সপ্লোরেশন
পাহাড়ে ট্রেকিং
ছবি তোলা ও প্রকৃতি উপভোগ
০৯
ইনানী বিচ – পাথর আর নীল জলের মায়া
কক্সবাজার থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
ইনানী সমুদ্র সৈকত, যা এর পাথুরে সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে সূর্যের আলো পাথরে
প্রতিফলিত হয়ে অপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি করে। শান্ত পরিবেশের কারণে এটি
দম্পতি ও পরিবারভিত্তিক ভ্রমণকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
কি করবেন:
বিকেলের সময় সূর্যাস্ত উপভোগ
সৈকতের ধারে হাঁটা ও ছবি তোলা
কাছের রিসোর্টে আরাম
কি খাবেন:
স্থানীয় রেস্টুরেন্টে চিংড়ি ভুনা, রূপচাঁদা ফ্রাই
১০
মারমেইড ও কোরাল বিচ – নিরিবিলি রোমান্স
যারা শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য
মারমেইড বিচ ও কোরাল বিচ হতে পারে আদর্শ। এখানে আপনি
রিসোর্টের নিজস্ব প্রাইভেট বিচে সময় কাটাতে পারবেন। সূর্যাস্তের সময় এই
সৈকতের রঙিন দৃশ্য মন কেড়ে নেয়।
কি করবেন:
রিসোর্টের প্রাইভেট বিচে সময় কাটানো
সূর্যাস্ত দেখা
মোমবাতির আলোয় ডিনার
১১
রিজু খাল (Rezu Khal) – নদী ও সমুদ্রের মিলন
স্থানীয়ভাবে পরিচিত “রিজু খাল”, যেখানে নদী ও সমুদ্রের মিলন ঘটে। এটি
কক্সবাজারের কম ভ্রমণকৃত স্থানগুলোর একটি, কিন্তু প্রকৃতিপ্রেমীদের
জন্য এক স্বর্গ। এখানে আপনি ছোট নৌকায় ভ্রমণ করে বনজ প্রাণী ও পাখি
দেখতে পারবেন।
কি করবেন:
নৌভ্রমণ ও বার্ডওয়াচিং
স্থানীয় মাছ ধরা দেখা
১২
টেকনাফ – বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্ত
টেকনাফ
হলো বাংলাদেশের দক্ষিণতম প্রান্ত, যেখানে নাফ নদী মিয়ানমারের
সাথে সীমান্ত গঠন করেছে। এখানে পাহাড়, নদী, বন এবং সমুদ্র একসাথে মিশে
গেছে। সেন্ট মার্টিন যাওয়ার মূল নৌঘাটও টেকনাফে অবস্থিত।
কি করবেন:
নাফ নদীতে নৌভ্রমণ
শাহ পরীর দ্বীপ দেখা
টেকনাফ সৈকতে সূর্যাস্ত উপভোগ
১৩
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ – প্রবাল দ্বীপের রূপকথা
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ
সেন্ট মার্টিন
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার দক্ষিণে অবস্থিত। নৌকায় বা জাহাজে চড়ে
সেন্ট মার্টিন যাওয়া এক রোমাঞ্চকর ভ্রমণ। দ্বীপটির অপর নাম নারিকেল
জিঞ্জিরা, কারণ এখানে অসংখ্য নারিকেল গাছ রয়েছে। নীল সমুদ্র, সাদা
বালির সৈকত ও প্রবাল প্রাচীর – সব মিলিয়ে এটি এক স্বর্গীয় স্থান।
দর্শনীয় স্থান:
দারুচিনি দ্বীপ, ছেঁড়া দ্বীপ, পশ্চিম সৈকতের সূর্যাস্ত, প্রবাল পাথর ও
স্বচ্ছ নীল পানি।
কি করবেন:
সাঁতার ও স্কুবা ডাইভিং
বীচে তাঁবু টানা ও রাত কাটানো
সাইকেল ভাড়া করে দ্বীপ ঘোরা
কি খাবেন:
তাজা মাছ, কাঁকড়া, লবস্টার
স্থানীয় নারিকেল পানি
১৪
মহেশখালী দ্বীপ – সংস্কৃতি ও ইতিহাসের মিলন
কক্সবাজারের আরেকটি জনপ্রিয় স্থান হলো
মহেশখালী দ্বীপ। এটি একটি পাহাড়ি দ্বীপ যেখানে একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে সবুজ বন।
এখানে আছে আদিনাথ মন্দির, যা একটি প্রাচীন হিন্দু তীর্থস্থান। এছাড়া
বৌদ্ধ মঠ, লবণ চাষ এবং মৎস্য শিকার এই দ্বীপের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
কি করবেন:
নৌকায় ভ্রমণ
পাহাড়ি পথ হাঁটা
স্থানীয় বাজারে শুকনো মাছ কেনা
কি খাবেন:
মহেশখালীর শুকনো চিংড়ি
দেশি স্টাইলে রান্না করা ভাত-ভর্তা
১৫
সোনাদিয়া দ্বীপ – নির্জনতার রাজ্য
সম্প্রতি পর্যটন মানচিত্রে আবির্ভূত হওয়া
সোনাদিয়া দ্বীপ একটি নিরব স্বর্গ। এটি একটি বনাঞ্চল ও সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা। যারা ভিড় থেকে দূরে,
একান্তে প্রকৃতির সান্নিধ্য কাটাতে চান, তাদের জন্য সোনাদিয়া আদর্শ।
এখানে নেই কোনো স্থায়ী বাসিন্দা বা হোটেল। কেবল রয়েছে নির্জন সৈকত,
সবুজ বন এবং নানা প্রজাতির পাখি। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একেবারে
স্বর্গীয় গন্তব্য।
কক্সবাজারে ঘুরতে এসে কোথায় থাকবেন?
কক্সবাজারে থাকার জন্য রয়েছে অসংখ্য হোটেল, রিসোর্ট ও বিচ-ফ্রন্ট স্টে।
তবে যদি আপনি চান সমুদ্রের সবচেয়ে কাছাকাছি, শান্ত পরিবেশে, প্রাইভেট
বিচের অভিজ্ঞতা—তাহলে সাম্পান বিচ রিসোর্ট হতে পারে আপনার সেরা
পছন্দ।
কেন সাম্পান রিসোর্ট বেছে নেবেন?
সমুদ্রের ঠিক পাশে অনন্য লোকেশন
নিরিবিলি পরিবেশ – পরিবার ও দম্পতিদের জন্য আদর্শ
সুন্দর ও প্রশান্ত পরিবেশে প্রাইভেট বিচ অ্যাক্সেস
চমৎকার ইন-হাউস রেস্টুরেন্টে তাজা সী-ফুড
আধুনিক রুম সুবিধা, বারান্দা থেকে সমুদ্রের দৃশ্য
শিশু-বান্ধব ও ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি অ্যাম্বিয়েন্স
পর্যটন স্পটগুলোতে সহজ যাতায়াত
আপনি যদি কক্সবাজার ভ্রমণকে সত্যিই স্মরণীয় করতে চান, তাহলে সাম্পান
রিসোর্টে থাকা একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হবে। আগেই বুকিং করে নিলে রুম পাওয়া
সহজ হয়, বিশেষ করে পিক সিজনে।
কক্সবাজার ভ্রমণের টিপস
কক্সবাজার এর দর্শনীয় স্থানসমূহ শুধু ভ্রমণ নয়, এ যেন একটা জীবনের
অভিজ্ঞতা। এখানে এসে আপনি ভুলে যাবেন শহরের কোলাহল, হারিয়ে যাবেন
প্রকৃতির কোলে। তাই আজই প্ল্যান করুন – কক্সবাজার অপেক্ষা করছে আপনার
জন্য!
ভ্রমণের সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ মাস হল কক্সবাজার
ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এই সময়ে আবহাওয়া থাকে মনোরম।
কোথায় থাকবেন: কক্সবাজারে রয়েছে বাজেট থেকে লাক্সারি
পর্যন্ত হাজারো হোটেল ও রিসোর্ট। সাম্পান বিচ রিসোর্ট হতে
পারে আপনার জন্য আদর্শ জায়গা। আগে থেকে বুকিং দিয়ে নিলে ভালো হয়।
কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসরি বাস, ট্রেন (চট্টগ্রাম হয়ে)
এবং বিমানে করে কক্সবাজার যাওয়া যায়। বিমানে যেতে সময় লাগে প্রায়
১ ঘন্টা, বাসে ১০-১২ ঘন্টা।
স্থানীয় খাবার: কক্সবাজারের সমুদ্রের তাজা মাছ, চিংড়ি,
কাঁকড়া। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে রান্না করা সীফুডের স্বাদ নিতে ভুলবেন
না।
সতর্কতা:
স্রোতের সতর্কতা: সমুদ্রে সাঁতার কাটার সময় স্রোতের
ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ: সেন্ট মার্টিন বা ইনানীর মতো
জায়গায় নির্দিষ্ট পথেই চলাফেরা করুন।
পরিবেশের যত্ন: পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হোন, প্লাস্টিক বা
কোন ময়লা আবর্জনা সমুদ্রে বা সৈকতে ফেলবেন না।
কক্সবাজার ঘুরতে চাইলে এখনই পরিকল্পনা করুন
কক্সবাজার এর দর্শনীয় স্থানসমূহ ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা
শুধু ভ্রমণ নয়, এটি প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সাথে এক আত্মিক সংযোগ।
সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জনে, পাহাড়ের সবুজে, আর সূর্যাস্তের লালিমায় আপনি
খুঁজে পাবেন জীবনের অন্যরকম প্রশান্তি। তাই, পরবর্তী ছুটির পরিকল্পনা
করছেন? আপনার ব্যাগ রেডি করে বেরিয়ে পরুন, আর হারিয়ে যান কক্সবাজারের
অপুরুপ সৌন্দর্যে।
কক্সবাজার এর দর্শনীয় স্থান সমূহ প্রায়ই জিজ্ঞাসিত
প্রশ্নোত্তর
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতই সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ভ্রমণযোগ্য স্থান। এটি
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
সূর্যাস্ত, সাঁতার, ও ঘোড়ায় চড়া—সবকিছুই এখানে উপভোগ্য। প্রতিদিন
হাজারো পর্যটক এখানে আসে শুধুমাত্র ঢেউয়ের মায়া দেখতে।
নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময় কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য
সবচেয়ে ভালো। তখন আবহাওয়া শীতল ও সাগর শান্ত থাকে। বর্ষার সময়
ঢেউ অনেক বড় হয়, তাই পরিবারের সঙ্গে গেলে শীতকালই নিরাপদ।
ইনানি বিচ তার নীল পানির জন্য এবং প্রাকৃতিক প্রবাল-পাথরের
সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে ভিড় কম, তাই নিরিবিলি সময় কাটাতে
পারেন। সূর্যাস্তের দৃশ্য এই বিচের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।
জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্ষা মৌসুমে গেলে জলপ্রপাতের
সৌন্দর্য দেখা যায়। তখন পাহাড়ি ঢালে পানি ঝরে পড়ে মন ভরে যায়।
তবে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে, তাই সাবধানে চলা উচিত।
কক্সবাজার শহর থেকে গাড়ি বা মোটরবাইকে সহজেই মেরিন ড্রাইভে যাওয়া
যায়। রাস্তা একদম সমুদ্রের ধার ঘেঁষে চলে, দৃশ্যগুলো অপূর্ব। ভোর
বা বিকেলে গেলে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়।
কক্সবাজার শহরের ঘাট থেকে নৌকায় বা ট্রলারে চড়ে মহেশখালী দ্বীপে
যাওয়া যায়। পথে সাগরের মাঝখানে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।
দ্বীপে গিয়ে বৌদ্ধ বিহার, পুরোনো মন্দির আর স্থানীয় বাজার ঘুরে
দেখার সুযোগ পাবেন।
বার্মিজ বাজারে পাবেন কাঠের গয়না, হস্তশিল্প, ব্যাগ, পোশাক, এবং
ঘর সাজানোর নানা পণ্য। এখানে দাম কিছুটা দর কষে নিলে সাশ্রয় হয়।
সন্ধ্যার আলোয় বাজারের পরিবেশ আরও রঙিন হয়ে ওঠে।
অন্তত তিন দিন থাকা ভালো, যাতে প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলো দেখা
যায়—সমুদ্র সৈকত, ইনানি, হিমছড়ি, বর্মিজ বাজার, মহেশখালী
ইত্যাদি। সময় বেশি থাকলে টেকনাফ বা সেন্টমার্টিনও ঘুরে আসা যায়।
হোটেল বা রিসোর্টের ভাড়া মৌসুম অনুযায়ী ভিন্ন হয়। সাধারণ হোটেল
১৫০০-২৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, আর ভালো রিসোর্টের ভাড়া ৫০০০
টাকার ওপরে। আগেই বুকিং করলে অনেক সময় ডিসকাউন্ট মেলে। সেরা
রিসোর্ট হচ্ছে সাম্পান বিচ রিসোর্ট।
এখানে সী-ফুড খুব জনপ্রিয় — চিংড়ি, কোরাল মাছ, লবস্টার, এবং
ঝিনুকের পদ চেখে দেখতে পারেন। এছাড়া বর্মিজ বাজারের নারকেল পিঠা
বা চা-স্ন্যাকসও সুস্বাদু। স্থানীয় খাবার দোকানগুলোতেই সবচেয়ে
আসল স্বাদ পাওয়া যায়।
Discover Cox’s Bazar travel itineraries for families for 3-day stay. Explore beaches, sightseeing, food & kid-friendly activities to make your trip memorable.