অফ সিজনে কক্সবাজার ট্যুর: ভ্রমণের এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা
বাংলাদেশের পর্যটন জেলা কক্সবাজার সাধারণত পর্যটকের ভিড়ে মুখর থাকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। একটু সাহসী আর ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে “অফ সিজন”, অর্থাৎ বর্ষাকাল কিংবা গ্রীষ্মকালে কক্সবাজার ঘুরে আসাই হতে পারে এক অন্যরকম আনন্দের উপলক্ষ। অনেকেই ধারণা করেন এই সময়টায় কক্সবাজার ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ বা উপভোগ্য নয়, কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা একেবারে উল্টো।

বেশিরভাগ মানুষই ছুটির মৌসুমে এখানে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন, কিন্তু অফ-সিজনে কক্সবাজার ভ্রমণের আলাদা একটা মজা আছে। এই ব্লগে আমরা জানব—কেন আপনি অফ সিজনে কক্সবাজার ট্যুরে যাবেন, কী কী সুবিধা পাবেন, আর কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি।
প্যাকেজ সম্পর্কে জানুনকক্সবাজার ট্যুরে অফ সিজন বলতে কি বুঝায়?
আমরা যখন কক্সবাজার ভ্রমণের কথা বলি, তখন সাধারণত শীতকাল—অক্টোবর থেকে মার্চ—কে “অন সিজন” ধরা হয়। এই সময়টিতে আবহাওয়া শুষ্ক, ঢেউ তুলনামূলক শান্ত এবং পর্যটকের ভিড় থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আর এর বিপরীত সময়টিই হলো “অফ সিজন”।
অফ সিজন বলতে মূলত বোঝায়:
- এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কাল
- বর্ষাকাল (জুন-সেপ্টেম্বর) এবং গ্রীষ্মকাল (এপ্রিল-মে)
অফ-সিজনে কক্সবাজার কেন যাবেন?
প্রকৃতির রোমাঞ্চ খোঁজার নেশায় যারা মাতোয়ারা, তাদের কাছে "অফ সিজন" নামক এই সময়টাই সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর। প্রকৃতি এক ভিন্নরূপে—মেঘের আড়ালে সূর্য, উত্তাল সমুদ্র আর সবুজ পাহাড়ের সম্মোহনী মেলবন্ধন। এই সময়টিতে আবহাওয়া অনিশ্চিত হলেও প্রকৃতির ভিন্ন রূপ, নির্জন সৈকত ও সাশ্রয়ী খরচ—সব মিলিয়ে অফ সিজন কক্সবাজার ট্যুর হয়ে উঠতে পারে এক ব্যতিক্রমী ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
অফ সিজনে কক্সবাজার যাওয়ার ৭টি চমৎকার কারণ
নিম্নে অফ সিজনে কক্সবাজার যাওয়ার কারন গুলো আলোচনা করা হলঃ

- কম ভিড়, দারুণ রিলাক্স: অফ সিজনে কক্সবাজারে পর্যটক কম থাকায় সৈকত থাকে ফাঁকা। হিমছড়ি, ইনানী, মহেশখালী, দরিয়ানগর—সবখানে পাবেন একান্ত নিজের মতো সময় কাটানোর সুযোগ।
- হোটেল ও রিসোর্টের আকর্ষণীয় ছাড়: এই সময়ে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট এমনকি বিলাসবহুল পাঁচতারকা হোটেলেও পাওয়া যায় বিশাল ডিসকাউন্ট। অল্প বাজেটেই রাজকীয় অভিজ্ঞতা পাওয়া সম্ভব।
- বর্ষার ঢেউ ও মেঘলা আকাশের মোহ: বর্ষাকালে কক্সবাজারের সমুদ্র হয়ে ওঠে আরও রোমাঞ্চকর। বিশাল ঢেউ, চমৎকার পাহাড় আর সাদা মেঘের খেলা সত্যিই মনমুগ্ধকর।
- ৪. চমৎকার ফটোগ্রাফির সুযোগ: কম ভিড়ে ও মেঘলা আবহাওয়ায় সূর্যাস্ত, পাহাড়, সৈকত—সবকিছুই হয়ে ওঠে নিখুঁত ফ্রেম। ইনস্টাগ্রাম বা ব্লগের জন্য অসাধারণ কনটেন্ট তুলতে পারবেন।
- স্থানীয় খাবারে বাড়তি যত্ন: পর্যটক কম থাকায় রেস্টুরেন্টগুলোতে পাওয়া যায় গুণগত মানসম্পন্ন খাবার ও ভালো সেবা। টাটকা সি-ফুড, চানাচুর, নারিকেল ভাজা—সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা।
- পরিবহন খরচ কম: ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী বাস, ট্রেন বা প্লেনের টিকিটও পাওয়া যায় তুলনামূলক কম দামে।
- মানসিক প্রশান্তি: প্রকৃতির কাছাকাছি, জনশূন্য সৈকতে হাঁটতে হাঁটতে যে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়, তা হয়তো সিজনের কোলাহলে পাওয়া সম্ভব না।
কিভাবে কক্সবাজার যাবেন?
কক্সবাজার ভ্রমণ এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ ও আরামদায়ক। আপনি চাইলে যেকোনো বাজেট ও সময় বিবেচনায় বিভিন্ন উপায়ে কক্সবাজার যেতে পারেন।
বাসে কক্সবাজার যাত্রা
ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের বড় শহরগুলো থেকে কক্সবাজারগামী এসি ও নন-এসি বাস চালু রয়েছে।
জনপ্রিয় বাস সার্ভিস:
গ্রীন লাইন, সেন্টমার্টিন, হানিফ, সোহাগ, এনা, শ্যামলী, রয়্যাল কোচ, দেশ ট্র্যাভেলস প্রভৃতি।
- সময় লাগে: ৮-১০ ঘণ্টা
- ভাড়া: সাধারণত ৳১২০০–৳২২০০ (এসি) এবং ৳৬০০–৳৮৫০ (নন-এসি)
বিমানে কক্সবাজার
সবচেয়ে দ্রুত ও আরামদায়ক উপায়। ঢাকা থেকে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি ফ্লাইট চলে।
এয়ারলাইন্স গুলো হচ্ছে:
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস
- ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস
- নভো এয়ার
- সময় লাগে: ৩০–৪৫ মিনিট
- ভাড়া: শুরু ৳৪৫০০–৳৮৫০০ (সিজন অনুযায়ী পরিবর্তন হয়)
ট্রেনে কক্সবাজার ভ্রমণ
ঢাকা- কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ায় কক্সবাজার এখন রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত হলো সারাদেশের সাথে।
- ট্রেন: কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস
- সময়: ৮–৯ ঘণ্টা
- খরচ: প্রায় ৳৬০০–৳১৫০০
ব্যক্তিগত গাড়িতে কক্সবাজার
ঢাকা থেকে কক্সবাজার প্রায় ৩৯০ কিলোমিটার। নিজস্ব গাড়ি বা মাইক্রোবাসে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ব্যবহার করে যাওয়া যায় আরও আরামদায়কভাবে।
- সময় লাগে: ৮–১১ ঘণ্টা (যানজট বিবেচনায়)
কক্সবাজারে কোথায় থাকবেন?
কক্সবাজারে থাকার জন্য রয়েছে নানা ধরনের আবাসিক ব্যবস্থা—বাজেটফ্রেন্ডলি হোটেল থেকে শুরু করে বিলাসবহুল রিসোর্ট পর্যন্ত। অফ সিজনে পর্যটক কম থাকায় অনেক হোটেলেই পাওয়া যায় আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট এবং নিরিবিলি পরিবেশ।

সাম্পান বিচ রিসোর্ট এন্ড ক্যাফে
কলাতলী মেরিন ড্রাইভের একদম প্রান্তে অবস্থিত সাম্পান বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাফে—একসাথে প্রকৃতি ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার অপূর্ব মিশেল। অফ-সিজনে এই রিসোর্টে থাকার অভিজ্ঞতা হতে পারে আরও আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী।
- সাগরের একদম পাশেই, মনোরম দৃশ্য
- বিলাসবহুল রুম ও স্যুট
- ওয়ার্ল্ড-ক্লাস স্পা সার্ভিস
- সুইমিং পুল, ক্যাফে, প্লে জোন
- দ্রুত গতির ওয়াইফাই
- অফ সিজনে বিশেষ অফার ও প্যাকেজ
- ফ্রেশ সী ফুডের সমাহার
নোটঃ আপনি সাম্পান ছাড়াও আরও কিছু চমৎকার হোটেল ও রিসোর্ট অফ সিজনে ডিসকাউন্ট অফার করে। কক্সবাজার ট্যুর কে স্মৃতিময় করার জন্য এই হোটেল গুলোকেও বিবেচনায় রাখতে পারেনঃ হোটেল সী প্যালেস, লংবীচ হোটেল, সাইমন বিচ রিসোর্ট, প্রাসাদ প্যারাডাইজ, কক্স টুডে হোটেল।
অফ সিজনে কক্সবাজারে ভ্রমনের সেরা টুরিস্ট স্পট সমূহ
অফ সিজনের ভ্রমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকেই শুধু না, কক্সবাজারের লোকাল লাইফস্টাইলকেও আপনাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ দেবে। ঝুঁকি আর রোমাঞ্চের মিশেলে কক্সবাজার ভ্রমণ হবে আপনার ট্র্যাভেল ডায়েরির সেরা অধ্যায়! নিম্নে কক্সবাজারের সেরা টুরিস্ট স্পট গুলো দেয়া হলঃ
বর্ষায় হিমছড়ির ঝর্নাটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত ও আরও সুন্দর। পাহাড়ি সিঁড়ি বেয়ে উঠলে দেখা যায় দুর্দান্ত সমুদ্রের দৃশ্য, আর নিচে ঝরনার ঝিরঝিরে পানিতে পাওয়া যায় এক প্রশান্তির পরশ।
কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে অবস্থিত ইনানী বিচ অফ সিজনে হয় একেবারে নিরিবিলি। লাল প্রবাল পাথর ও গাঢ় নীল পানির মিশেলে এটি হয় এক চিত্র postcard-এর মতো।
অফ সিজনে এই দ্বীপগুলো ঘুরতে গেলে পাবেন স্থানীয় সংস্কৃতি, কেওড়া বন, লবণচাষ এবং বৌদ্ধ মন্দিরের স্বাদ। নৌকাভ্রমণ বর্ষাকালে হয়ে ওঠে আরও রোমাঞ্চকর।
বৌদ্ধ ধর্মের নিদর্শন দেখতে চাইলে রামু আদর্শ জায়গা। এখানে আছে দেশের অন্যতম বড় বৌদ্ধ মূর্তি ও বহু বিহার, যা অফ সিজনে দর্শকদের বাড়তি প্রশান্তি দেয়।
কলাতলী পয়েন্ট হলো মূল কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় সৈকতের অংশ। বর্ষাকালে এখানে ভিড় কম থাকায় আপনি সমুদ্রের বিশাল ঢেউ উপভোগ করতে পারবেন একান্তে।
স্মৃতিস্বরূপ কেনাকাটা করতে চাইলে লাবণী ও সুগন্ধা মার্কেট অফ সিজনে বেশ সুবিধাজনক। দাম কম, ভিড় কম—সবকিছুই পর্যটকদের পক্ষে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসড়ক “মেরিন ড্রাইভ” বর্ষার মেঘলা দিনে আরও মোহনীয় হয়ে ওঠে। সড়কের এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে সমুদ্র—এ এক অপূর্ব দৃশ্যপট।
অফ-সিজনে কী কী করবেন?
কক্সবাজার, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। অফ সিজনে ভিড়হীন সৈকত, শান্ত পরিবেশ, আর সাশ্রয়ী খরচে একটি অবিস্মরণীয় ট্যুরে কি কি করবেন, তা তুলে ধরা হলঃ

- কলাতলী বা সুগন্ধা বিচে হালকা বৃষ্টির মধ্যে রেইনকোট পরে হাঁটুন – ঢেউয়ের তান্ডবলীলা আর লোনা বাতাসের মিশেলে শরীর-মন সতেজ হবে।
- স্থানীয় শেক ফিশের দোকানে গরম গরম সীফুড খেতে ভুলবেন না। বর্ষায় মাছের স্বাদই আলাদা! স্পেশালিটি: রেইনি ডে স্পেশাল ক্র্যাব কারি (২০০-৩০০ টাকা)।
- সমুদ্রঘেঁষা ক্যাফে থেকে উইন্ডো সিটে বসে হার্বাল টি/কফি নিন। মেঘে ঢাকা সমুদ্র আর ঝাউবনের দৃশ্য দেখতে দেখতে বই পড়ুন বা গান শুনুন।
- টিপ: বিকেল ৪টার পর ক্যাফেতে বসলে সানসেটের পরিবর্তে মেঘের রঙিন খেলার শো দেখতে পাবেন!
- বর্ষায় বাকখালী নদীতে স্পিডবোট রাইড (৩০০-৪০০ টাকা/ব্যক্তি) নিন – দুইপাশের সবুজ পাহাড় আর বৃষ্টিস্নাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট দেখে মনে হবে Amazon-এর বাংলাদেশি ভার্সন!
- সতর্কতা: লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক, এবং শুধুমাত্র স্থানীয় গাইডের সাথে যাবেন।
- ইনানী বিচ থেকে ১২ কিমি দূরে হিমছরি পাহাড়ি ঝর্ণায় ট্রেক করুন (গাইড ভাড়া ৫০০ টাকা)। বর্ষায় ৩০ ফুট উচ্চতা থেকে পড়া জলের শব্দ আর চারপাশের কুয়াশা আপনাকে পরী লোকে নিয়ে যাবে!
- প্যাকিং: ওয়াটারপ্রুফ ট্রেকিং শুজ, এক্সট্রা পোশাক।
- স্থানীয় জেলেদের সাথে আলাপ করে নৌকায় করে সমুদ্রে মাছ ধরার সুযোগ নিন (ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকা/২ ঘণ্টা)। বর্ষায় ইলিশ, রূপচান্দা ধরা পড়ে বেশি।
- বোনাস: ধরা মাছ রান্না করিয়ে খেতে পারবেন সমুদ্রপাড়ের ছোট রেস্টুরেন্টে!
লাবনী পয়েন্টের কাছে স্থানীয় বাজারে বর্ষার সিজনাল ফল কিনুন:
- জংলি আনারস (৫০ টাকা/পিস)
- কাঠালের মোনা (১০০ টাকা/কেজি)
- সমুদ্রকেল (বিক্রেতারা বিনামূল্যে চেখে দেখাতে দেয়!)
অফ সিজনে কক্সবাজার ভ্রমণের পরামর্শ ও সতর্কতা
অফ সিজনে কক্সবাজার ভ্রমণে অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি:
- আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন।
- নৌযাত্রার আগে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে কি না জেনে নিন।
- সমুদ্রে নামার সময় সতর্ক থাকুন, বড় ঢেউ ও স্রোত থাকতে পারে।
- জরুরি ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিন।
- মোবাইলে লোকেশন শেয়ার ও পর্যাপ্ত চার্জ নিশ্চিত করুন।
- ক্যামেরা, ছাতা ও রেইন কোট সঙ্গে নিন, বৃষ্টির সময় দরকার হতে পারে।
- হালকা স্ন্যাকস ও পানির বোতল সাথে রাখুন।
উপসংহার: নির্জনতার মাঝে স্বর্গানুভূতি
অফ সিজনের কক্সবাজার ভ্রমণ শুধু বাজেট-ফ্রেন্ডলি নয়, এটি এক প্রকার "আত্মার থেরাপি"। যখন দেখবেন মেঘের ফাঁক দিয়ে হঠাৎ রোদ এসে পড়েছে সমুদ্রের ফেনিল জলরাশিতে, আর আপনি সমস্ত বিচ দখল করে আছেন একাই—বুঝবেন এই নির্জনতাই তো বিলাসিতা! কম খরচে, কম ভিড়ে, বেশি প্রকৃতির সংস্পর্শে এক ঝকঝকে সফর—এটাই অফ সিজন কক্সবাজার ট্যুরের আসল সৌন্দর্য।
তাই সময়, সাহস আর মন খোলা থাকলে একবার ঘুরেই আসুন বর্ষার কক্সবাজার!
অনলাইন বুকিংয়ের জন্য কল করুন